দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন! আদালত
আদিলুর রহমান এর জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
১০-১০-২০২৩ ০৫:১৮:৩২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১০-১০-২০২৩ ০৫:১৮:৩২ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি :
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের দণ্ড নিয়ে করা আপিল আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়েছে। ফলে আপাতত তাদের কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
অন্যদিকে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানার দণ্ড স্থগিত করা হয়েছে হাইকোর্টে।
মঙ্গলবার আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিনের জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিরোধিতা করেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। এক পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন।
শুনানির শুরুতে আদিলুর-এলানের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী উপস্থিত হন। এসময় রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল করিম জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, আমাদেরও বক্তব্য আছে। তখন হাইকোর্ট বলেন, আসামিদের আইনজীবীদের আগে বলতে দিন। আপনি এখন লাফ দিয়ে উঠছেন কেন?
এরপর আসামিদের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় আসামিদের দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। রায়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এসময় আবারও জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম। তখন আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তাহলে তাদের দুই বছরের সাজা দিলেন কেন? যাবজ্জীবন দণ্ড দিতে পারলেন না!
এক পর্যায়ে আদালত বলেন, দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন।
এরপর আদিলুর রহমান খান ও নাসির উদ্দিন এলানকে জামিন দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ স্থগিত করেন।
সাজার বিরুদ্ধে আদিলুর-এলানের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. এমদাদুল হক আজাদের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভূঁইয়া ও মো. আহসানুজ্জামান ফাহিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।
এক দশক আগে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগে হওয়া মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত তাদের দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ের পর এর বিরুদ্ধে ২৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী। আপিল আবেদনে সাজা বাতিল করে খালাস চাওয়া হয়। এছাড়া জারিমানার দণ্ড স্থগিত ও জামিন চাওয়া হয়। আদিলুর-এলানের কারাদণ্ড হওয়ার পর থেকেই তাদের মুক্তি জানিয়ে বিবৃতি দিয়ে আসছিল দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন।
অন্যদিকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা মামলায় সর্বোচ্চ সাজা ২০ বছর এবং সর্বনিম্ন সাজা ৭ বছর হলেও তাদের দণ্ড তুলনামূলক কম হওয়ায় সাজা বাড়াতে গত ৫ অক্টোবর হাইকোর্টে আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স